মধুপুরে জাল দলিল মামলায় পিবিআই’র মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদনের অভিযোগ - TangailTimes24
  • সংবাদ শিরোনাম

    মধুপুরে জাল দলিল মামলায় পিবিআই’র মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদনের অভিযোগ

    মধুপুর প্রতিনিধি :

    টাঙ্গাইলের মধুপুরে জাল দলিল মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর মিথ্যা মনগড়া প্রতিবেদনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

    মধুপুরে জাল দলিল মামলায় পিবিআই’র মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদনের অভিযোগ

    উপজেলার দামপাড়া গ্রামের মৃত আ. রেজ্জাকের ছেলে মো.  আ. ছালাম তার সৎ ভাইদের বিরোদ্ধে পৈত্বিক বসতভিটা জাল দলিল করার অভিযোগে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা করলে পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক  মোখলেছুর রহমান (বিপি নং - ৮৫১১১৩৫৯০৮) আদালতে মিথ্যা, বানোয়াট, আর উদ্দেশ্য প্রণোদিত তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেছেন।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত আ. রেজ্জাক তার জীবৎদশায় ছেলে-মেয়েদের জায়গা-জমি ভাগ বাটোয়ারা করে দিয়ে গেছেন। কিন্তু আ. রেজ্জাকের মৃত্যুর পর পিতায় দলিল করে দিয়েছেন বলে আ. ছালামের বসতভিটা উচ্ছেদ করার চেষ্টা করে সৎ ভাই মো. জাহাঙ্গীর ও আনোয়ার।

    আ. ছালাম জানান, যে জমি পিতায় নিজ হাতে ভাগ করে দিয়ে গেলেন সেই জমি কিভাবে তাদেরকে দলিল করে দিলেন। দলিলের কথা পিতা জীবিত থাকা অবস্থায় না বলে  কেন নয় বছর পর প্রকাশ করলেন। দলিলে পিতার স্বাক্ষর গড়মিল থাকা এবং চেনা সাক্ষী দলিলের কথা না জানায় দলিলটি জাল মনে হওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করেন আ. ছালাম। কিন্তু রহস্যজনক কারনে পিবিআই বিবাদীদের খুশি করার জন্যই মনগড়া মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন।

    মিথ্যা তদস্ত প্রতিদেনের প্রতিবাদে গতকাল সোমবার মধুপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগি মো. আ. ছালাম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছালাম অভিযোগ করেন, জাল দলিলের প্রমানের জন্য আদালতে আমি যে সব  প্রামাণ্য দলিল দাখিল করেছি তদন্ত কর্মকর্তা সেই দলিল যাচাই-বাছাই না করে বিাদীদের দ্বারা আরো কিছু জাল দালিল তৈরি করে তার ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে আসামীদের বাঁচানোর অপচেষ্টা করেছেন। বিতর্কিত দলিলে উল্লেখিত ১৬(ষোল) ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বরকে ১৭ (সতেরো) ডিজিটে ( রিরাইট, ঘষামাজা) রূপান্তর করে পিবিআই উল্লেখিত জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরকে প্রথমে পরিচিতি পরে জন্মনিবন্ধন বলে পাশ কাটিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।। অপরদিকে দলিলের চেনাসাক্ষি মুসলিম উদ্দিনের বক্তব্যও তদন্ত প্রতিবেদনে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 

    অন্য চেনাসাক্ষী মো. ছানোয়ার হোসেন নাকি মো. আঃ কাদের নাকি ছানোয়ার হোসেন @ সাজু এই নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন পিবিআই’র ওই কর্মকর্তা। এছাড়াও পিবিআই তদন্তে ৭ (সাত) জন নিরপেক্ষ সাক্ষীর নামে ১ ও ২ নং বিবাধীর মা, একজন ভগ্নিপতিকে দুই ঠিকানা দিয়ে দুইবার ব্যবহার করে সাক্ষিদের কলেবর বৃদ্ধি করা হয়েছে। দলিল সম্পাদনকালে বিতর্কিত দলিলের ২ নং চেনা সাক্ষী মো. ছানোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন না। ওনার নাম ব্যবহার করেছেন, মধুপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকল/ জাল দলিল প্রস্তুতের মূলহোতা দলিল লেখক মামলার ৩ নম্বর বিবাধী মো. আরিফুল ইসলাম। বিতর্কিত  হেবা দলিলদাতা মো. আঃ রেজ্জাক এর জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ: ২০/০৭/১৯৩৮ খ্রি.। কিন্তু মধুপুর পৌরসভা কর্তৃক ম্যানুয়াল জন্ম নিবন্ধনের জন্ম তারিখ: ১২/০১/১৯৩৭ খ্রি.। একি লোকের দুইটি জন্ম তারিখ যা দলিল এবং জন্ম নিবন্ধনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে সাক্ষিদের সাক্ষ্য সরেজমিন ও ভিডিও ফুটেজকে অস্বীকার করে মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। পিবিআই নিশ্চিত ভাবেই প্রমাণ করেছেন ৮ ও ১১ নং সাক্ষি একই ব্যাক্তি। দুই ব্যাক্তি এক হয় কিভাবে সে ব্যাখ্যা তিনি দেননি। সরকারি তদন্ত প্রতিবেদনে কেন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চালাকি করলেন?

    হস্তলিপি পরীক্ষার নামে বাদীর উপস্তাপিত দলিল বাদ দিয়ে বিবাদী কর্তৃক সরবরাহকৃত ৫টি দলিল হস্তলিপি পরীক্ষার  জন্য প্রেরণ করে বিবাদীদের পক্ষে পক্ষালম্বন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। হস্তলিপি পরীক্ষার জন্য মামলায় উল্লেখিত বাদীর দলিল বিশেষজ্ঞর কাছে পাঠানো হয়নি। হস্তলিপি পরীক্ষাকৃত দলিলগুলোও জাল দলিল থাকতে পারে। মূলত জাল প্রমাণ দিয়ে জালকে সত্যায়ন করা হয়েছে।

    দলিলের চেনাসাক্ষি মুসলিম উদ্দিন জানান, যে দলিলে আমাকে চেনা সাক্ষি দেখানো হয়েছে আমি সেই দলিল সম্পর্কে কিছুই জানি না।

    পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান জানান, যাচাই-বাছাই করে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। বাদী ইচ্ছে করলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন চ্যালেঞ্চ করতে পারেন। 

    সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মধুপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম ছামদানী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সভাপতি মু. ঘাবিবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম শহীদ, সাংবাদিক আনছার আলী, আমিনুল হক, নাজমুছ সাদাৎ নোমান, আলকামা শিকদার, আকবর আলী, রাজিবুল ইসলাম প্রমূখ। 


    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728