কৃষক আমান আলী হত্যা: তদন্তে গড়িমসি ও পক্ষপতিত্বের অভিযোগ স্বজনদের
নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় কৃষক আমান আলী (৬০) প্রকাশ্যে নিসংশভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ হওয়া মামলার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও ওই মামলার অভিযোপত্র জমা দেয়নি পুলিশ।
কোনো আসামিকেও তারা গ্রেপ্তার করেনি। এনিয়ে স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা। আসামিপক্ষ প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকায় ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছেন আমান আলীর স্বজনরা। নিহত পরিবারের দাবি মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের।নিহত আমান আলী উপজেলার মুশুদ্দি উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আয়েত আলীর ছেলে। প্রতিবেশীদের হামলায় আহত হয়ে সাতদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ১১ মার্চ রাতে আমান আলী মারা যান। এ ঘটনায় করা মামলার পর থেকেই পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা। আদালতে মামলার অভিযোপত্র জমা দিতে গড়িমসি ও পক্ষপতিত্ব করছে বলে জানান তারা।
আমান আলী মারা গেলে ওই রাতেই ধনবাড়ী থানায় ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি করেন নিহতের চাচা মো. মনিরুজ্জামান।
মামলার আসামিরা হলেন_ মো. সবুজ খান, ফারুক খান, রঞ্জু মিয়া, সাইদুর রহমান ও মো. ফরিদ। এঁরা মুশুদ্দি উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। মামলা নং-১/১৮, তারিখ: ১১/০৩/২০২৪ ইং।
মামলার বিবরণী, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত আমান আলীর চাচা মনিরুজ্জামানের ছেলে মেহেদী হাসানের সাথে সাইদুর রহমানের মেয়ে কলেজ পড়ুয়া বৃষ্টি খাতুনের প্রেমের সম্পর্ক। মেহেদীদের বাড়িতে নিজ ইচ্ছায় চলে আসে বৃষ্টি। পরে স্থানীয় মাতাব্বরদের মাধ্যমে তাকে সাইদুরের পরিবারে কাছে ফেরত দেয়া হয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৫ মার্চ বিকালে মেহেদীদের বাড়ির সামনে লাঠিসোটা ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সাইদুর গংরা আমান আলী, সাগর মিয়া ও নাজিমদের উপর হামলা চালায়। হামলাতে আমান আলীসহ সাতজন আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আমান আলীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানেও তার অবস্থা অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাত দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১১ মার্চ রাতে মারা যান তিন সন্তানেরজনক আমান আলী।
হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক গড়িমসি ও পক্ষপতিত্ব করছেন অভিযোগ বাদি মো. মনিরুজ্জামানের। তিনি বলেন, ‘আসামিরা এলাকায় অবস্থান করলেও এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তার করেনি ধনবাড়ী থানা-পুলিশ। দ্রুত মামলা তুলে না নিলে আমার ছেলে মেহেদী-কেও মেরে ফেলা হবে বলে সাইদুর গংরা নানাভাবে হুমকী-ধামকী দিচ্ছে।’
হত্যা হ্যাকাণ্ডে দ্রুত ন্যায়বিচার চান নিহত আমান আলীর স্ত্রী রেজিনা বেগম ও ছেলে মো. শাহাদৎ হোসেন। তারা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ; আমাদের পাশে দাঁড়ানো মত কেউই নেই। দ্রæত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হোউক।’
‘ওই হত্যা মামলার চূড়ান্ত মেডিকেল পরিক্ষার প্রতিবেদন হাতে পেয়েছেন বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ধনবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’
‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সিনিয়র পুলিশ সুপার মধুপুর সার্কেল ফারহানা আফরোজ জেমি’
No comments