সখীপুরে নির্বাচনে হেরে রাস্তার ইট তুলে নিলো প্রার্থীর অনুসারীরা - TangailTimes24
  • সংবাদ শিরোনাম

    সখীপুরে নির্বাচনে হেরে রাস্তার ইট তুলে নিলো প্রার্থীর অনুসারীরা

    নিজস্ব প্রতিবেদক:

    নির্বাচনের দুই দিন আগে তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সড়কে ইট লাগানো শুরু করলেও নির্বাচনে হেরে যাওয়ার তিন দিন পর চেয়ারম্যান প্রার্থীর অনুসারীরা ওই রাস্তা থেকে ইট সরিয়ে অন্য সড়কে নিয়ে যায়। টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বড়চোনা ইউনিয়নের কুতুবপুর ভিয়ায়েলপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।



     গত সোমবার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউসুফ আলী ভূঁইয়া জামানত হারিয়েছেন। এতে ইউসুফ আলী ভূঁইয়া খুবই ক্ষুব্ধ হন। পরে তার অনুসারীরা তার দেয়া ইটগুলো এক রাস্তা থেকে অন্য রাস্তায় নিয়ে যায়।

    এ প্রসঙ্গে ইউসুফ আলী ভূঁইয়া  বলেন, ওই প্রকল্পের সভাপতি হাবিবুল্লাহ মিয়া ভুল করে এক রাস্তার ইট অন্য রাস্তায় নিয়ে যান। এতে হাবিবুল্লাহ ও গ্রামবাসীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।

    সখীপুরে নির্বাচনে হেরে রাস্তার ইট তুলে নিলো প্রার্থীর অনুসারীরা


    উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চারটি ইউপিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য গত ২০ জুন গ্রামীণ অবকাঠামো সড়ক সংস্কারের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর গ্রাম কুতুবপুরে ছয়টি টিআর প্রকল্প দেন। এর মধ্যে চার নম্বর ক্রমানুসারে 'কুতুবপুর ভাইয়েলপাড়ার মাথা থেকে চ্যাটারপাড় পর্যন্ত ইটভাটা' প্রকল্পে আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভোটের আশায় নির্বাচনের দুই দিন আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ভাইয়েলপাড়ায় গিয়ে প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে প্রায় ৪০ ফুট সড়কে ইট বসানোর কাজ শেষ হয়। বাকি ২০০ ফুট সড়কের ইটভাটা নির্বাচনের পর শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনে হেরে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তিনি। পরে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউসুফ আলী ভূঁইয়ার অনুসারী প্রকল্পের সভাপতি হাবিবুল্লাহ মিয়া প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে রাস্তার পাশে রাখা ইটগুলো একটি ট্রাকে করে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে অন্য সড়কে নিয়ে যান ইট বিছানোর জন্য। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গতকাল হাবিবুল্লাহ ওই রাস্তা থেকে তিন ট্রাক ইট নিয়ে যান। তিনি তার বাড়িতে ইট ভর্তি একটি ট্রাক রেখে গেছেন।

    এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তার পাশে স্তূপ করা ইট নেওয়ার পাশাপাশি শ্রমিকরা রাস্তার ওপর ফেলে রাখা ইটগুলো সরাতে শুরু করলে স্থানীয় লোকজনের বাধায় তারা চলে যায়।

    শুক্রবার সকালে দেখা যায়, প্রায় ৪০ ফুট জায়গাজুড়ে ইট বিছানো হয়েছে। এর থেকে ১০ ফুট রাস্তা থেকে ইট সরানোর চিহ্ন রয়েছে। রাস্তার চারপাশে ইটভাটা দেখা যায়নি।

    উপজেলার বড়চোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কুতুবপুর ভাইয়েলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল কাদের শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে কে বলেন, ভোটের দুই দিন আগে ওই সড়কে ইটভাটার কাজ শুরু হয়। এ সময় গ্রামবাসীর সহানুভূতি ও ভোটের আশায় দুই ট্রাকবোঝাই ইট ও বালু ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু ভোটে হেরে ইউসুফ আলী ভূঁইয়া ক্ষুব্ধ হয়ে ওই সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তার নির্দেশে হাবিবুল্লাহ মিয়া সেখান থেকে তিন ট্রাক ইট নিয়ে নির্মাণ কাজের জন্য অন্য সড়কে নিয়ে যান।

    ওই এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, সজিব ও নুরুল ইসলাম কে বলেন, রাস্তার পাশে তিন ট্রাক ইট রাখার পর শ্রমিকরা ফেলে রাখা ইট তুলতে থাকে। গ্রামবাসী তাদের বাধা দিলে তারা চলে যায়।

    উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি (নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী) সদ্য বিজয়ী বড়চোনা ইউপি চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বলেন, 'বৃহস্পতিবার রাতে ওই রাস্তার ইটভাটার কথা শুনে ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।

    প্রকল্পের সভাপতি হাবিবুল্লাহ মিয়া শুক্রবার বিকেলে  বলেন, অন্য রাস্তা নির্মাণের জন্য আনা দুটি ইটের ট্রাকের চালক ভুল করে ওই সড়কে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে ওই দুই ট্রাকে ইট আনা হয়। ওই সড়কের জন্য বরাদ্দ আড়াই লাখ টাকার কাজ এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য পিআইওকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হবে। সম্পূর্ণ কাজ শেষ না হলে কোনো বিল দেওয়া হবে না।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728