কাঁঠালে সয়লাব সখীপুরের হাট-বাজার
সখীপুর প্রতিনিধি:
সখীপুর উপজেলার কাঁঠাল বিক্রির বিভিন্ন হাট জমে উঠছে। উপজেলার সর্বত্র এবার কাঁঠালের আবাদ বেশি হওয়াতে ১০-১২টি হাটে চলছে কাঁঠালের রাজত্ব। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৪০-৫০ লাখ টাকার কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে। এসব কাঁঠাল যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে স্থানীয় কাঁঠাল মালিক ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন।
কাঁঠালের ভরা মৌসুমে উপজেলার নলুয়া, দেওদীঘি, কালমেঘা, কালিদাস, কীর্তনখোলা, কচুয়া, কুতুবপুর, বড়চওনা, মহানন্দপুর, গড়বাড়ি, বেড়বাড়ি বাজারে কাঁঠালের হাট বসে। তবে এসব কাঁঠালের হাটগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কুতুবপুর। এ হাট কুতুবপুর কলার হাট হিসেবে বেশি পরিচিত থাকলেও জ্যৈষ্ঠ মাসে রূপ পাল্টে হয়ে যায় কাঁঠালের হাট।
উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়নে অবস্থিত এ হাটে সপ্তাহে প্রায় ৩০ লাখ টাকার কাঁঠাল কেনা-বেচা হয়। সপ্তাহের শনি-রবি ও মঙ্গল-বুধবার বসে এ হাট। এখানে বিক্রিত কাঁঠাল প্রতিদিন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া সপ্তাহের বৃহস্পতিবার নলুয়া বাজার, সোমবার দেওদীঘি, মঙ্গলবার মহানন্দপুর ও শনিবার তক্তারচালায় হাট বসে। সব মিলিয়ে সখীপুর থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাঁঠাল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
কুতুবপুর হাটে সরেজমিনে জানা গেছে, কৃষক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা শনিবার বিকেল থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত এবং মঙ্গলবার বিকেল থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত হাটে কাঁঠাল আনেন। পরে এখান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কাঁঠাল কিনেন এবং ট্রাকে করে নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে থাকেন ।
কুতুবপুর হাটের আড়তদার আবুল কালাম জানান, প্রতি হাটে এখানকার ১৪ থেকে ১৮ ট্রাক কাঁঠাল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। সে হিসাবে প্রতিটি হাটে কাঁঠাল বিক্রি হয় প্রায় ১৫ লাখ টাকার। সপ্তাহের দুই দিনে যার অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ৩০ লাখ টাকা। উপজেলার অন্যান্য হাটেও ১৫-২০ লাখ টাকার কাঁঠাল কেনাবেচা হয়।
স্থানীয় কাঁঠাল ব্যবসায়ী কলিম উদ্দিন, নূরুল ইসলাম ও সামেদ আলী জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাঁঠাল কিনে স্বল্প লাভে মহানন্দপুর, কুতুবপুর, দেওদীঘি, তক্তারচালা হাটে পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। ছোট-বড় আকার অনুযায়ী প্রতিটি কাঁঠাল বিক্রি হয় ২০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে।
গত মঙ্গলবার উপজেলার মহানন্দপুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদ হোসেন নামের এক কৃষক কাঁধে ঝুলিয়ে (বাইকে করে) বড় দুটি কাঁঠাল বিক্রি করতে এসেছেন। তিনি প্রতিটি কাঁঠাল বিক্রি করলেন ৮০ টাকা দরে। ওই হাটে কালিহাতী থেকে আসা কাঁঠাল ব্যবসায়ী ফজল হক বলেন, আমি প্রতি সপ্তাহে কাঁঠাল কিনতে সখীপুরে আসি। এক ট্রাক কাঁঠাল (দুই হাজার) নিয়ে ঢাকা যাই, স্বল্প লাভে বিক্রি করে আবার চলে আসি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মণ বলেন, পাহাড়ী লাল মাটির সখীপুর উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় অনেকটা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে কাঁঠাল গাছ রোপণ করা হয়। ফলে উপজেলার সব এলাকায় কম-বেশি কাঁঠালগাছ দেখা যায়। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করতে পারলে অবশ্যই লাভবান হওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
No comments