সরকারী কৃষি ঋণ চেয়ে রংপুর তামাক চাষী ও ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
ইকবাল হোসেন, রংপুর:
তামাক চাষীদের জন্য সরকারী ভাবে কৃষি ঋণের ব্যবস্থাসহ পাঁচ দফা দাবিতে মানবন্ধন কর্মসূচি, বিক্ষোভ মিছিল ও ডিসি অফিস ঘেরাও করেছে রংপুর তামাক চাষী ও ব্যবসায়ী সমিতি। সোমবার বেলা ১১টায় রংপুর কর কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডিসি অফিস ঘেরাও করে তারা। মানববন্ধন শেষে রংপুর কর কমিশনার শাহীন আক্তার হোসেনের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর চেয়ারম্যান বরাবর পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
তাদের দাবি গুলো হলো- কৃষক/ চাষীদের নিকট থেকে তামাক ক্রয়ের উপর ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার, তামাক চাষীদের জন্য সরকারী ভাবে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা, বিড়িতে অগ্রীম আয়কর ১০ শতাংশ প্রত্যাহার করা, তামাক চাষীদের ঋণের নামে ব্রিটিশ আমেরিকার টোব্যাকোর সুদের ব্যবসা বন্ধ করা এবং বিদেশে তামাক রপ্তানি বন্ধ না করা।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত লাভলু সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন তামাক চাষী ও ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক জামিল আক্তার। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি, যুগ্ম-সম্পাদক হারিক হোসেন, প্রচার সম্পাদক শামীম ইসলাম, বিড়ি শ্রমিক নেতা লুৎফর রহমান এবং তামাক চাষী ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের মাটি এবং আবহাওয়া তামাক চাষের উপযোগী। এই অঞ্চলে অন্য কোন ফসল ভালো না হওয়ায় এ অঞ্চলসহ দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ তামাক চাষের সঙ্গে জড়িত। এই তামাক বিক্রি করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। পরিবারের ভরনপোষনের পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ জোগায়ে থাকি। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানীর চক্রান্তে সরকার চলতি অর্থবছর থেকে তামাক ক্রয়ের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ আয়কর প্রদান চালু করেছে। দেশীয় তামাক কোম্পানীর জন্য ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার করা হলে তারা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে বলে আমরা মনে করি। এছাড়া এই তামাক দেশীয় শ্রমিকবান্ধব বিড়ি শিল্পে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং তামাক চাষী ও বিড়ি শ্রমিকদের স্বার্থে বিড়ির উপর অর্পিত অগ্রিম ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, এই অঞ্চলের উৎপাদিত তামাক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। ফলে আমাদের দেশে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মূদ্রা অর্জিত হয়। এতে দেশের অর্থনীতিতে রেমিটেন্স যুক্ত হয়। কিন্তু বহুজাতিক কোম্পনীর একটি প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এদেশের সাধারণ গরিব তামাক চাষীদের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে সুদের মাধ্যমে দাদণ বা ঋণ দিয়ে একক ভাবে তামাক ক্রয় করে আসছে। তামাক চাষীদের ঋণের নামে ব্রিটিশ আমেরিকার টোব্যাকোর সুদের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। তামাক চাষীদের জন্য সরকারি কৃষি ঋণের ব্যবস্থা হলে আমরা ব্রিটিশ আমেরিকার টোব্যাকোর নিকট তামাক বিক্রি বন্ধ করে দিব। জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমেরিকা ব্রিটিশ নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমরা তামাক চাষীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পাশে থেকে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।
No comments