বাসাইল পৌর ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
বিশেষ প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিব মিয়ার (২৪) বিরুদ্ধে ঘরে ঢুকে এক নববধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে ওই গৃহবধূ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে সাকিব ও তার আরও দুই সহযোগির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামি সাবিক মিয়া জেলার বাসাইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে। মামলায় অন্য দুই আসামী হচ্ছেন, বাসাইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত হাকিম মিয়ার ছেলে সাইদুল মিয়া (৩০) ও একই গ্রামের জুয়েল মিয়ার ছেলে মো. শাহেদ (২৫)।
মামলা ও ভিকটিম সূত্রে জানা যায়, রবিবার (১৪ মে) দিবাগত রাতের খাবার খেয়ে ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসাইল পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিব ও তার দুইজন বন্ধু ওই গৃহবধূর স্বামীকে ডাক দেন। এসময় সাকিব জানায় তার এক স্বজন অসুস্থ তাকে দেখতে যেতে হবে। এজন্য সাকিব ওই গৃহবধূর স্বামীর মোটরসাইকেলটি চেয়ে নেন। পার্শ্ববর্তী বাড়ি হওয়ায় সরল বিশ্বাসে গৃহবধূর স্বামী ঘর থেকে মোটরসাইকেলটি বের করে দেন। পরে মোটরসাইকেলটি কিছুদূর নিয়ে যাওয়ার পর পুনরায় তার স্বামীকে ডাকতে থাকেন এবং মোটরসাইকেলটি স্টার্ট করে দিতে বলেন। এসময় তার স্বামী মোটরসাইকেলটি স্টার্ট দিতে গেলে কৌশলে সাকিব ঘরে ঢুকে তার স্ত্রীকে ওড়না দিয়ে মুখ বেধে ধর্ষণ করতে থাকে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মুখের বাধন খুলে গেলে তিনি চিৎকার শুরু করেন। এসময় তার স্বামী ও আশপাশের লোকজন এসে সাকিবকে হাতেনাতে আটক করে। খবর পেয়ে তার অন্য সহযোগিরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সাকিবকে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ বিষয়ে কাউকে জানালে বা মামলা করলে হত্যারও হুমকি দেওয়া তাদের।
এদিকে, এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাসাইল থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি বলেও আদালতে দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ওই মেয়ের মাত্র তিন মাস আগে বিয়ে হয়েছে। এই সময়ে বখাটে সাকিব এমনকান্ড ঘটিয়েছে। সাকিব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউসের ভাতিজা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। এঘটনায় ভিকটিমের পরিবার চরম আতঙ্কে রয়েছেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কামরান খান বিপুল বলেন, ‘ঘটনায় ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা নের্তৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউস জানান, এই ধর্ষণের ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ ওই গৃহবধূকে দিয়ে এই ধর্ষণ মামলাটি করিয়েছে।
এঘটনায় অভিযুক্ত সাকিব মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ভূক্তভোগি নববধূর মামলা না নেওয়ার বিষয়ে বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কেউ ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করতে থানায় আসেনি।
No comments