বংশাই-ঝিনাই তীরে ভাঙন আতঙ্ক
মির্জাপুর উপজেলার বংশাই ও ঝিনাই নদীর পানি অসময়ে বেড়ে গেছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বৃদ্ধি পেয়েছে নদী দুটির পানি। এতে তীরবর্তী ১০-১২ গ্রামের মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে ভাঙন আতঙ্ক। ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে ব্যক্তি উদ্যোগে চলছে নানা প্রচেষ্টা।
নদীভাঙনকবলিত এলাকা হিসেবে পরিচিত মির্জাপুর পৌর এলাকার পোস্টকামুরী সওদাগরপাড়া, বাওয়ার কুমারজানী উত্তরপাড়া এবং ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া, ফতেপুর, বানকাটা, চাকলেশ্বর, বৈলানপুর-পাতিলাপাড়া, সুতানরি, ফতেপুর উত্তরপাড়া ও ভাতগ্রাম ইউনিয়নের গোড়াইলে নদীতীরবর্তী মানুষজনের মধ্যে এ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
পানি বাড়ায় বংশাই নদীর পোস্টকামুরী সওদাগরপাড়ায় নির্মিত আলহাজ একাব্বর হোসেন এমপি সেতুটি রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। কারণ, শুকনো মৌসুমে সেতুটির পাশে চলে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা আর বর্ষাকালে চলে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা।
নদীর পানিবৃদ্ধি এবং কমে যাওয়ার সময়টাতেই মির্জাপুর সদরের পোস্টকামুরী সওদাগরপাড়া ও বাওয়ার কুমারজানী উত্তরপাড়ায় শুরু হয় ভাঙন। বংশাই নদীর পানিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আলহাজ একাব্বর হোসেন এমপি সেতুর আশপাশের শতাধিক পরিবারের মধ্যে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন আতঙ্ক।
সেতুটির পাশ ঘেঁষা বাড়ির বাসিন্দা মজিবুর রহমান জানান, তার বাড়িটি ২৮ শতাংশ জমির ওপর ছিল। ভাঙতে ভাঙতে এখন অবশিষ্ট আছে মাত্র দুই শতাংশ। ভাঙন ঠেকাতে তিনি নিজ উদ্যোগে বঁাঁশের বেড়া দিয়েছেন।
বাওয়ার কুমারজানী উত্তরপাড়ায় বিসমিল্লাহ রাইস মিলের মালিক জহির হোসেন জানান, তাদের ৫০ শতাংশ রাইস মিল ভাঙতে ভাঙতে এখন ২০ শতাংশে এসে ঠেকেছে। দুই সপ্তাহ ধরে নদীর পানি বাড়ছে। যেকোনো সময় ভাঙন দেখা দিতে পারে। ভাঙন ঠেকাতে নিজ উদ্যোগে বালুর বস্তার ব্যবস্থা রেখেছেন বলে তিনি জানান।
থলপাড়া গ্রামের আবুল কাশেম খান বলেন, নদীর পানিবৃদ্ধি এবং কমা দুটোই আমাদের জন্য আতঙ্কের। এই দুই সময়েই আমাদের এলাকায় নদীভাঙন শুরু হয়। বর্তমানে বানকাটা, সুতানরি ও বৈলানপুর এলাকার মানুষ নদীভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন। কারণ এসব এলাকায় প্রতিবছর শুকনো মৌসুমে ভেকু দিয়ে নদী থেকে মাটি কাটা এবং বর্ষায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন চলে।
এছাড়া হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় ব্লক বাঁধটির একাংশ সম্প্রতি ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকায় বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙন দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওই এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিলে স্কুলটি হুমকির মধ্যে পড়বে বলে এলাকাবাসী জানান।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় ব্লক বাঁধটি সংস্কারের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। পানি কমলে কাজ শুরু হবে। তাছাড়া কোথাও ভাঙন দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগের মাধ্যমে তা ঠেকানোর ব্যবস্থা করা হবে।
No comments